Thursday, July 7, 2016

The Role of Ready Made Garments in Bangladesh Economy [ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্পের অবদান]

Ready Made Garments in Bangladesh Economy

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্প

বাংলাদেশ বিশ্বের ৫০টির অধিক দেশেে পোশাক রপ্তানি করছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান ক্রেতা দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য(UK), ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, বেলজিয়াম, এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই (USA) হলো বাংলাদেশী পোশাকের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। মোট রপ্তানি আয়ের ৫৬ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্জিত হয়। দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) । পোশাক শিল্পে বর্তমানে প্রায় ৮৪টি ক্যাটাগরি আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৪০টি ক্যাটাগরি উৎপাদন করে থাকে।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প (Garments Industry) অগ্রবর্তী প্রভাব(Forward Linkage) এবং পশ্চাৎ প্রভাব (Backward Linkage) এর মাধ্যমে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার উদঘাটন করেছে।

রপ্তানি বাণিজ্য: আশির দশকে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে গার্মেন্টস শিল্পের অবদান ছিল না। বর্তমানে মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ গার্মেন্টস এর অবদান। প্রায় ৫০০টি বায়িং হাউস গার্মেন্টস সামগ্রী ক্রয় বিক্রয়ে নিয়োজিত আছে।
কর্মসংস্থান: যেসব অদক্ষ মহিলা শ্রমিক হতাশায় বিনিদ্র রজনী যাপন করতো তাদের সুনিপুণ হাত লেগে আছে বিশ্ববাজারের জন্য পোশাক তৈরির কাজে। প্রায় ৪০ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে গার্মেন্টস শিল্পে যাদের অধিকাংশই মহিলা।
উদ্যোক্তা সৃষ্টি: কৃষি ভিত্তিক বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে কয়েক হাজার শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে। এসব উদ্যোক্তা যেমন ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে দক্ষ, তেমনি তাদের রয়েছে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র অর্থনীতি এসব দক্ষ উদ্যোক্তার সুনিপুণ প্রচেষ্টায় শিল্পোন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হবে।
বস্ত্র শিল্প: গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশে বিভিন্ন স্পিনিং, উইভিং, নিটিং, ডাইং, ফিনিশিং, এবং প্রিন্টিং শিল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। এতে দেশে বহু বস্ত্র শিল্প গড়ে উঠেছে।

প্রসাধন শিল্প: গার্মেন্টস শিল্পের প্রভাবে বাংলাদেশে প্রসাধন শিল্প প্রসারিত হয়েছে। কারণ গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে প্রসাধন চর্চার হার বেশি।
♦ পরিবহন ও বন্দর ব্যবহার: গার্মেন্টস শিল্পের সামগ্রী আমদানি ও রপ্তানির ফলে বন্দর থেকে ফ্যাক্টরি পর্যন্ত পরিবহণ শিল্পের অগ্রগতি  এবং  বন্দরের অধিক ব্যবহারের ফলে আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্যাকেজিং শিল্পের প্রসার: গার্মেন্টস শিল্পের প্রভাবে প্যাকেজিং, গার্মেন্টস, জিপার, বোতাম, বহু প্রকার প্যাকেজিং শিল্পের প্রসার ঘটেছে।

♦ এছাড়া গার্মেন্টস শিল্পে বিনিয়োগ করে করে ব্যাংক লাভবান হচ্ছে, বীমা কোম্পানির প্রিমিয়ামের পরিমাণ বাড়ছে, বাংলাদেশে নতুন নতুন প্রযুক্তির আগমন ঘটছে, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের পরিচিতি ও অবস্থান পাকা হচ্ছে।

গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে দেশে অর্থনীতির অন্যান্য খাতেরও বিকাশ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকিং ও বীমা খাত, পরিবহণ ও যোগাযোগ খাত, নির্মাণ খাত, গবেষণা ও শিক্ষা খাত, শিপিং ও কার্গো খাত, এবং স্থল বন্দরে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ গুলো হল:
♦ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও অনুকূল ভূমিকা
♦সস্তা, সুশৃঙ্খল এবং কর্মমুখী শ্রমিক শ্রেণী
♦ দেশের নিবেদিত প্রাণ উদ্যোক্তা শ্রেণী
♦ উন্নত ধরণের পোশাক তৈরি
♦ বিশ্ববাজারে সহজে প্রবেশের সুযোগ
♦ কাঁচামাল আমদানিতে শিথিল নীতিমালা
♦ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকসমূহের সহযোগিতা ইত্যাদি।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সমস্যা

বহুবিধ সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে এখনো নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সরকার পোশাক শিল্পের অনুকূলে প্রায় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করে যাচ্ছে। তথাপিও সুদের হার এবং অন্যান্য আর্থিক নীতি এ খাতের অনুকূল নয়।
♦ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বন্দর সুবিধাও পর্যাপ্ত নয়। অসুবিধাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অস্পষ্ট খরচ। ফাইল মুভমেন্ট, এলসি খোলা, মাল খালাস প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানা ধরণের অস্পষ্ট ব্যয় ঘটছে যা এ শিল্পকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে।

তাছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কাঁচামাল ঢাকার কারখানায় পৌঁছাতে যেখানে সাতদিন লাগার কথা, সেখানে বর্তমানে প্রায় একুশ দিন লেগে যায়। বাংলাদেশ যদিও মুদ্রার অবমূল্যায়ন করে যাচ্ছে, তারপরও প্রতিযোগি দেশ আরো বেশি হারে মুদ্রা অবমূল্যায়ন করে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment

Please Comment here

-->

Popular Posts

-->
-->